প্রকাশিত: Wed, Jun 5, 2024 8:57 AM
আপডেট: Sat, Dec 6, 2025 9:50 PM

[১]পাঁচলাখের মতো এনআইডি আবেদন পেন্ডিং [২]বাড়তি কাগজপত্রের বোঝা চাপাচ্ছে ইসি

এম এম লিংকন: [৩]  অতি গুরুত্বপূর্ণ এই এনআইডির ভুল সংশোধন নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তি দূরই হচ্ছে না। এক একটা আবেদন নিষ্পত্তিতে সময় লাগছে মাসের পর মাস আবার কারো কারো আবেদন পড়ে আছে বছরের পর বছর।

[৪.১] সম্প্রতি ইসির এক সভায় উঠে আসে  হেড অফিসসহ সারাদেশে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি এনআইডির সংশোধনী আবেদন পেন্ডিং রয়েছে। 

[৪.২] জানা যায়, ইসিতে পেন্ডিং থাকা আবেদনের মধ্যে ক ক্যাটাগরিতে প্রায় এক লাখ  খ ক্যাটাগরিতে দুই লাখ ২১ হাজার , গ ক্যাটাগরিতে দুই লাখের কাছাকাছি এবং ঘ ক্যাটাগরিতে প্রায় সাত হাজার ৬০০টির বেশি আবেদন পড়ে আছে। এছাড়া পাঁচ হাজারের বেশি আবেদন এখনো ক্যাটাগরি করা হয়নি। 

[৫] এ বিশাল পরিমাণ আবেদন পেন্ডিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে এনআইডির নতুন ডিজি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব  পেন্ডিংয়ের সংখ্যা একে বারেই কমিয়ে আনা আমার টার্গেট । প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে থেকেও সংশোধনীর আবেদন নিষ্পত্তি করবো। 

[৬] বিভিন্ন থানা বা উপজেলা নির্বাচন অফিসের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সব থেকে কম আবেদন পেন্ডিং থাকে ক্যান্টনমেন্ট থানা নির্বাচন অফিসে।

[৭] এই অফিসের কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও কাজের জটিলতা না থাকলে এই অফিসে কোনও আবেদন পেন্ডিং থাকে না বললেই চলে। কোনও কোনও মাসে দেখা যায় সর্বোচ্চ ১০০ টির মতো আবেদন পেন্ডিং থাকে বলে জানিয়েছেন তিনি।   

[৮]  সোমবার  সরেজমিনে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে দেখা যায়, চট্রগ্রাম থেকে একজন বয়স্ক ব্যক্তি তার মেয়েকে নিয়ে এসেছে সংশোধনীর আপডেট জানতে। তিনি জানান , মেয়ের নাম সংশোধনীর আবেদন করা মাস খানেক পার হয়ে গেলেও এখনও ক্যাটাগরি পড়েনি। 

[৯] সংশোধনী ছোট-খাটো না বড় ধরনের এর ওপর নির্ভর করে ক্যাটাগরি ভাগ করে কমিশনের কর্মকর্তারা। 

[১০] আরেক আবেদনকারী সজিব দাস আমাদের নতুন সময়কে বলেন, এনআইডিতে তার দুই বছর বেশি বয়স এসেছে। এটা নির্বাচন কমিশন ভুল করেছে। এটা চোখে পড়ার পর আমি সংশোধনের আবেদন করি। 

[১১] এনআইডিতে আমার জন্ম দেওয়া আছে ১৯৯৮ সালে কিন্তু আমার জন্ম ২০০০ সালে । আবেদনের সঙ্গে এসএসসি সার্টিফিকেটও দিয়েছি যোগ করেন তিনি। 

[১২] প্রথমে নাসিরনগর এরপর বি.বাড়িয়া বারবার ঘুরে এবার ঢাকার হেড অফিসও আমার আবেদনটি ক্যানসেল করেছে বলে জানান সজিব চন্দ্র দাস। সজিবের আবেদনে বাড়তি কাগজ পত্র চেয়ে দুইবারই ক্যানসেল করেছে ইসির কর্মকর্তারা।  

[১৩] বিভিন্ন সময় দেখা গেছে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার যোগ সাজসে কোনও কোনও ব্যক্তি একাধিক এনআইডি বানিয়ে ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন করে দেশের সর্বনাশ করছে। 

[১৪] আবার বড় ধরনের অপরাধীরা দুর্নীতির মাধ্যমে তথ্য গোপন করে এনআইডি বানিয়ে দেশ ছাড়ছে।আবার হাজার হাজার রোহিঙ্গারাও ভিতর ভিতর এনআইডি করেছে। 

[১৫] অথচ এদেশ থেকে সৎ পথে রোজগার করার জন্য যারা বিদেশে পাড়ি দেয় তাদের এনআইডি সংশোধনে অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত তথ্যের কাগজ চাইছে কর্মকর্তারা। 

[১৬]  বেশকিছুদিন আগেও পাসপোর্ট করতে এনআইডি লাগতো না। সে সময় যে যেভাবে পারে ইচ্ছেমতো বা প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশ গেছে। 

[১৭] এদের অনেকের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তুএনআইডির তথ্যে ভুল থাকায় পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারছে না এ সব অভিবাসীরা। 

[১৮] ৫০ বছরের বেশি একজন অভিবাসী ৫ বছরের কম- বেশি বয়স বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেশে কোন চাকরি করবে না এমন সাধারণ দর্শনও কাজে লাগানোর প্রয়োজন মনে করে না কর্মকর্তারা। 

[১৯] অথচ এ সব বিদেশীদের রেমিটেন্স দিয়েই দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখার চেষ্টা করছে সরকার।   সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী